Refer a friend and get % off! They'll get % off too.

Current trends of illicit drug use and the country response in Bangladesh (2005)

ডকুমেন্টটি ২০০৪/২০০৫ সালে অষ্ট্রেলিয়ায় ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্নে (University of Melbourne) এ পড়ার সময় করা আমার একটি রিসার্চ প্রজেক্ট। তখন সংক্রামক ব্যাধির রোগতত্ত্ব পড়ছি, সেখানে দুটো বাড়তি কোর্স ছিল মোনাশ ইউনিভার্সিটির (Monash Univesity) সাথে সংশ্লিষ্ট Centre for Harm Reduction এ; (যা এখন Macfarlane Burnet Institute for Medical Research & Public Health এর অংশ); মাদক সমস্যা এবং তার নিয়ন্ত্রেণে জনস্বাস্থ্য ভিত্তিক পলিসি, প্রোগ্রাম এবং তাদের ফলাফল দেখার একটা দুর্লভ সুযোগ হয়েছিল সে সময়। মেডিকেল ভাইরোলজীর ছাত্র হিসাবে ১৯৯৮ থেকেই বাংলাদেশে HIV/AIDS নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল। ২০০৩ এ যখন প্রথম দেশ ছাড়ি, ICDDRB পরিচালিত সরকারী সেন্টিনেল সার্ভেইলেন্স বলছে শিরায় মাদক সেবী বা Intravenous Drug User (IDU) দের মধ্যে HIV র প্রাদুর্ভাব ছিল প্রায় গড়ে ৪ শতাংশ, ঢাকার কিছু এলাকায় তখন সেটা প্রায় ৮ ছাড়িয়েছে। আমাদের দেশে বেশ আগে থেকেই মাদকসেবীদের মধ্যে HIV/AIDS বিস্তারের প্রতিরোধে সফলভাবে কাজ করে আসছিল বেশ কিছু এনজিও, যেমন, CARE। কিন্তু সরকারী বা বেসরকারী HIV/AIDS বিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসাবে মাদক সমস্যা মোকাবেলার সাথে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাদের বা সামগ্রিক রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের কিছু পার্থক্য ছিল সুস্পষ্ট।

আমাদের দেশে এখনও মাদক সমস্যাটিকে জনস্বাস্থ্যগত একটি সমস্যা হিসাবে আদৌ দেখা হয়না, দেখা হয় একটি আইনি সমস্যা হিসাবে। আমাদের মাদক বিরোধী আইনটি করেছিল এরশাদ সরকার ৮০র দশকের শুরুতে; সেখানে একজন মাদক গ্রহনকারী তার মাদকাসক্তির জন্যই অপরাধী এবং সেই আইনটি এটাও বলছে, মাদকসেবীকে চিকিৎসা দেবে সরকার। কিন্তু মাদকাসক্তি মুলত একটি স্বাস্থ্য সমস্যা, কারন অসুখটি মাদকাসক্ত একজন ব্যক্তির মস্তিষ্কে, একজন অসুস্থ মানুষকে অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে আইনটিতে এবং  এর সাথে যেটা যুক্ত হয়েছে আমাদের দেশে এর সত্যিকারের চিকিৎসার অপ্রতুলতা। এমনকি বেশ কিছু ঔষধ যা দিয়ে এর চিকিৎসা করা সম্ভব ছিল তাও বাংলাদেশের আইনে মাদকদ্রব্য হিসাবে চিহ্নিত।

আমাদের দেশে ’মাদককে না বলো’ বলে আন্দোলন পরিচালনা করছে প্রথম আলো, তা খুবই প্রাচীন একটি ধারণা যা রোন্যাল্ড রিগ্যানের সময় উৎপত্তি হয়েছিল তার তথাকথিত মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার মাধ্যমে।মাদকের বিরুদ্ধে যারা আসলে না বলতে পারে মাদকাসক্তির সমস্যা আসলে তাদের ক্ষেত্রে সাধারণত ঘটে না।আর কেউ একবার মাদক গ্রহন করলেই মাদকাসক্ত হয়ে যায় না।অপরাধ বাড়ার অনেক কারণ থাকলেও মাদক সমস্যাকে মুল সমস্যা হিসাবে দোষারোপ করার একটা প্রবণতা আছে প্রায় সর্বত্র তারও কিছু কারন আছে । এসবই তথ্য উপাত্ত দিয়ে প্রমাণিত। গত শতাব্দীতেই  পৃথিবীর বহুদেশ এ বিষয়ে যুক্তিযুক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে সফলও হয়েছে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বলা হয় মোট তিনটি পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ দরকার: মাদকের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ, চাহিদা নিয়ন্ত্রণ এবং মাদক ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্ভুত ক্ষতিকর বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ। সরবরাহ নিয়ন্ত্রণটি সবচে লোক দেখানো এবং জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। এটি সফলতা নির্ভর তরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ক্ষমতার উপর।যে দেশে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা লোকবলের অভাব আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দুর্বল করে রেখেছে, সেখানে এর সফলতা কতটুকু সেটাই প্রশ্ন। এছাড়া দরিদ্র কোন দেশে চোরাচালানে উৎসাহী করতে বড় মাদক ব্যবসায়ীদের কোন কষ্টই করতে হয়না। এই বড় মাদক ব্যবসায়ীরা কখনো ধরা পড়ে না।তারপরও কিন্তু জানা ও অজানা কিছু কারনে মাদক নিয়ন্ত্রণের সিংহভাগ অর্থ ব্যয় করা হয় এই ক্ষেত্রেই। কারন আমাদের নীতি মালায় মাদক সমস্য শুধুই আইনী একটি সমস্যা। সুতরাং নিয়ন্ত্রণ ব্যর্থ হওয়ারই কথা।

চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করার কেন্দ্রে আছে মাদকাসক্তদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা। খুবই অপ্রতুল সেই চিকিৎসার ব্যবস্থা বাংলাদেশে, তাছাড়া অপচিকিৎসাতো আছে, আর চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর ক্ষমতাও আছে খুব কম মানুষেরই। মাদক সম্বন্ধে জ্ঞান দেয়া যায়, তবে যে সমাজে সবচেয়ে ক্ষতিকর বড় মাদক ( তামাক, ও অন্য দেশে তামাক ও অ্যালকোহল) আইনসিদ্ধ মাদক হিসাবে ব্যপক ব্যবহৃত হচ্ছে, সেখানে সামান্য কয়েকটি বেআইনি মাদক সম্বন্ধে জ্ঞান দেয়াটা খুব একটা কাজে লাগে না। এছাড়া মাদক সম্বন্ধে যখন জ্ঞান দেয়া হয়, সেটা যারা দেন তারা প্রায়ই অবাস্তব সব জ্ঞান বিতরণ করেন, যেটা অনেকের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। আর যে খুব সামান্য শতাংশ মাদকাসক্তরা আসলেই জ্ঞান বিতরণের আওতায় আসেন।

সবশেষে মাদক ব্যবহারের সাথে যুক্ত ক্ষতিকর প্রভাব কমানোর চেষ্টা, যাকে Harm Redcution principle বলে: এটি জনস্বাস্থ্য নির্ভর একট নীতি, যা ঝুকিপুর্ণ যে কোন আচরণের সাথেই ক্ষতির পরিমান কমানোর প্রচেষ্ঠার অংশ। একজন আচরণকারী যেমন ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে, তেমনি তার সাথে সংশ্লিষ্ট সমাজের অন্যান্যরা এই ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে। খুবই প্রাগম্যাটিক এই নীতিটি বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণের একটি অংশ। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও আপাতত সব প্রমাণ বলছে, এটি সবচে প্র্যাকটিক্যাল একটা অ্যাপ্রোচ। মাদকাসক্তদের চিকিৎসা থেকে শুরু করে, তাদের কাউন্সেলিং, তাদের পরিষ্কার সুচ সিরিন্জ সরবরাহ ইত্যাদি সহ নানা কার্যক্রম। বাংলাদেশে বহু আগে থেকেই HIV/AIDS নিয়ন্ত্রণে এটি চালিয়ে আসছিল, CARE এবং আরো কয়েকটি NGO; কিন্তু এটি কখনও আমাদের মূলনীতিতে প্রবেশ করেনি।তার প্রধান একটি কারন মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন।

গবেষণা বলছে মাদকাসক্তদের অন্যতম ক্ষতিটি হয় তাদের আসক্তির জন্য মাদক সংগ্রহের প্রক্রিয়ায়। অনেক দেশেই মেথাডোন ক্লিনিক আছে। যারা অপিওয়েড যেমন হেরোইন আসক্ত, তাদের এই হেরোইন এর বদলে অন্য একটি ঔষধ দেয়া যায়, যেমন মেথাডোন (যা মুখে খেতে হয়), কোন নির্দিষ্ট একটি ক্লিনিকে এসে তারা এই ঔষধটি সংগ্রহ করে, নিয়মানুযায়ী সেবাদানকারীর সামনে তা সেবন করতে হয়, দিনে একবার, তাহলে সে হেরোইন ছাড়ার ভয়াবহ প্বার্শ প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা পাবে, এবং মুখে খাওয়া মেথাডোনকে সে ধীরে ধীরে ছেড়ে দিতে পারবে। যেহেতু সে জানে তার আসক্তি জনিত প্রতিক্রিয়ার জন্য আর তাকে মাদক খোজার কাজে সময় ব্যয় করতে হবে না, সে ধীরে ধীরে সামাজিক জীবনেও ফিরে আসে। খুব সফল এই চিকিৎসাটি বাংলাদেশে এখন করা হয় কিনা জানি না তবে ২০০৫ অবধি যে তথ্য আমার আছে, তা হলো এটি মাদক আইনে নিষিদ্ধ, এছাড়া আরো কিছু অসুধ আছে এই তালিকায়।মাদক নিয়ন্ত্রনের জন্য আমাদের আসলে ভাবতে হবে, আর কোথায় কতটুকু গুরুত্ব দেব তা খুজে দেখার প্রয়োজন সারা বিশ্বে বৈজ্ঞানিক উপায়ে সংগৃহীত তথ্য উপাত্তের উপর।

 

২০০৪ এ Centre for Harm Reduction থেকে গবেষক গ্যারী রিড ( Gary Reid) বাংলাদেশে এসেছিলেন বাংলাদেশের HIV/AIDS নিয়ন্ত্রন প্রোগ্রামের একজন কনসালট্যান্ট হিসাবে, তার দ্বায়িত্ব ছিল বাংলাদেশের জন্য একটি Harm Reduction policy তৈরী করার। বাংলাদেশে ৩ মাস থাকাকালীন  বেশ কিছু ডকুমেন্ট তিনি সংগ্রহ করেছিলেন। সেই ডকুমেন্টগুলোর উপর ভিত্তি করে এই রিসার্চ পেপারটি লেখা। আমাদের দেশে সার্বিক মাদক পরিস্থিতি সম্বন্ধে আসলে সে সময় কোনো ডকুমেন্ট ছিল না। মুলত গ্যারী রিড (Gary Reid) এর প্রেরণায় এই কাজটি করা। ইচ্ছা ছিল দেশে ফিরে  এই ক্ষেত্রে কাজ করার, হার্ম রিডাকশনের সবচে বড় ডকুমেন্টটি অনুবাদ করার, কিন্তু সেটি করা আর সম্ভব হয়নি। এই পেপারটি লেখার সময়কাল ২০০৫, সুতরাং মধ্যবর্তী ১২ বছরে কিছু না কিছু তো বদল হয়েছে।  কারো যদি document টা কাজে লাগলে তা জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো। (ডকুমেন্টটি পিডিএফ ফরমাটে)

You will get a PDF (1MB) file

$ 0.00

This item is free.

Download Now

Discount has been applied.

Added to cart
or
Add to Cart
Adding ...